উত্তর : আত্মহত্যাকারী মুসলমান হ’লে তার জন্য দো‘আ ও ছাদাক্বা করা যায়। কেননা আত্মহত্যার ফলে সে কবীরা গুনাহগার হয়। কিন্তু কাফের হয়ে যায় না (নববী, শরহ মুসলিম ২/১৩২; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ৮/৩৫১)। জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) যখন মদীনায় হিজরত করেন, তখন তোফায়েল বিন আমরের সঙ্গে অন্য একজন লোকও হিজরত করে। মদীনার আবহাওয়া অনুকূলে না হওয়ায় অসহ্য হয়ে লোকটি স্বীয় হাতের আঙ্গুলসমূহের গিরা কেটে ফেলে। ফলে অধিক রক্ত প্রবাহিত হয়ে সে মৃত্যুবরণ করে। তারপর তোফায়েল বিন আমর একদিন স্বপ্নযোগে লোকটিকে খুব ভাল অবস্থায় দেখেন। কিন্তু তার হাত দু’টি ছিল আবৃত। তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার হাত দু’টি আবৃত কেন? তখন সে জবাবে বলল, মদীনায় হিজরত করার কারণে মহান আল্লাহ হাত দু’টি ছাড়া আমার সবকিছুই ক্ষমা করে দিয়েছেন। অতঃপর তোফায়েল স্বপ্নের ঘটনা নবী করীম (ছাঃ)-এর কাছে খুলে বললে তিনি আল্লাহর নিকট দো‘আ করেন। ফলে তার হাত দু’টিও ভাল হয়ে যায় (মুসলিম হা/১১৬; মিশকাত হা/৩৪৫৬; ‘আত্মহত্যাকারী কাফের না হওয়া’ অনুচ্ছেদ)।
উল্লেখ্য, আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘কেউ আত্মহত্যা করলে সে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে থাকবে’। ইমাম নববী উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় বলেন, (১) এখানে خالدًا مخلدًا এর মর্ম হ’ল সূদীর্ঘকাল ও অধিককাল, চিরস্থায়ী নয়। অর্থাৎ দীর্ঘকাল সে জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করবে এবং পরে জান্নাতে যাবে। (২) চিরস্থায়ী শাস্তি ঐ ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য, যে আত্মহত্যাকে হালাল মনে করে। এরূপ বিশ্বাসের কারণে সে কাফের হয়ে যাবে। আর কাফের নিঃসন্দেহে চিরস্থায়ী জাহান্নামী।
প্রশ্নকারী : নাছিরুদ্দীন, কলিকাতা, ভারত।