উত্তর : ‘ফিক্বহ’ অর্থ বুঝ। পারিভাষিক অর্থে কুরআন ও সুন্নাহর সঠিক বুঝ। আর এ ব্যাপারে ছাহাবায়ে কেরামের বুঝই সর্বাগ্রগণ্য। কারণ তাঁরাই ‘অহি’ নাযিলের প্রত্যক্ষ সাক্ষী এবং রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক তার প্রয়োগ ও ব্যাখ্যার যথার্থ অনুসারী ও বর্ণনাকারী। আল্লাহ বলেন, ‘অতএব তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হয় না, যাতে তারা দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করতে পারে এবং ফিরে এসে নিজ কওমকে (আল্লাহর নাফরমানী হ’তে) সতর্ক করতে পারে, যাতে তারা সাবধান হয়’ (তওবা ৯/১২২)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বীনের বুঝ দান করেন’ (বুখারী হা/৭১; মিশকাত হা/২০০)। তিনি ইবনু আববাস (রাঃ)-এর জন্য দো‘আ করে বলেন, ‘আল্লাহ তুমি তাকে দ্বীনের বুঝ দাও এবং কুরআনের ব্যাখ্যা শিক্ষা দাও’ (বুখারী হা/১৪৩; আহমাদ হা/২৩৯৭; ছহীহাহ হা/২৫৮৯)

ছাহাবায়ে কেরামের মধ্যে চার খলীফা সহ বিশিষ্ট কয়েকজন ছাহাবী এ ব্যাপারে অগ্রগণ্য ছিলেন এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁরাই ফৎওয়া দিতেন। অতঃপর তাবেঈ ও তাবে-তাবেঈদের যুগে এ ব্যাপারে বহু বিদ্বান খ্যাতি লাভ করেছেন। তাঁদের পরে মুজতাহিদ ইমাম ও বিদ্বানগণের মধ্যেও এরূপ রয়েছে।

বস্ত্ততঃ ফিক্বহ বলতে বুঝায় শরী‘আতের বিস্তারিত প্রমাণাদি থেকে শরী‘আতের ব্যবহারিক বিধি-বিধান সম্বন্ধে সঠিক বুঝ হাছিল করা। ফিক্বহ কোন শাস্ত্রের নাম নয়, এটি শরী‘আতের সঠিক বুঝের নাম। প্রসিদ্ধ চার ইমামের কেউ ফিক্বহের নামে কোন পৃথক কিতাব লিখে যাননি। বরং তাঁরা তাঁদের বুঝের আলোকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ফৎওয়া দিয়ে গেছেন। পরবর্তী কালে তাঁদের অনুসারীগণ তাদের দিকে সম্বন্ধ করে তাঁদের নামে ফিক্বহের কিতাব সমূহ রচনা করেছেন। যারা নির্দিষ্টভাবে কোন একটি মাযহাবের অনুসরণ করেন, তারা সেই মাযহাবের বিগত কিতাব সমূহে লিখিত ক্বিয়াসী ফৎওয়া সমূহের উপরে ক্বিয়াস করে আধুনিক যুগ-জিজ্ঞাসার জবাব দেন। এদেরকে বলা হয় ‘মুজতাহিদ ফিল-মাযহাব’। পক্ষান্তরে আহলেহাদীছ বিদ্বানগণ নির্দিষ্টভাবে বিগত কোন একজন ইমাম বা বিদ্বানের অনুসরণ করেননা, বরং আহলে সুন্নাতের যেকোন বিদ্বানের যে সিদ্ধান্ত কুরআন ও সুন্নাহর সর্বাধিক নিকটবর্তী অথবা ছাহাবায়ে কেরামের বুঝের সর্বাধিক অনুকূলে, তার আলোকে ফৎওয়া দেন। তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার থাকে কুরআন ও সুন্নাহর যথাযথ অনুসরণ করা। আর এটিই তাদের গৃহীত প্রধান মূলনীতি। এজন্য হাদীছের ছহীহ-যঈফ-মওযূ‘ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেকারণ আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক বলেন, ‘আমার নিকটে সনদ হ’ল দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত। যদি সনদ যাচাই না হ’ত, তাহ’লে যে যা খুশী তাই বলত’ (মুক্বাদ্দামা মুসলিম পৃ. ১৫)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার উপরে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যারোপ করে, সে জাহান্নামে তার ঠিকানা করে নিল’ (বুখারী হা/৩৪৬১; মিশকাত হা/১৯৮)

সুতরাং ইমামদের মতামত গ্রহণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের মূলনীতি হ’ল, কোনটি কুরআন ও ছহীহ হাদীছভিত্তিক এবং কোনটি সালাফে ছালেহীনের বুঝের অধিকতর নিকটবর্তী তা নির্ণয় করা। এক্ষেত্রে সত্যকে গ্রহণের জন্য অন্তরকে খোলা রাখতে হবে। আর তাক্বলীদ (অন্ধ অনুসরণ) এবং অতি যুক্তিবাদ থেকে দূরে থাকতে হবে (যুমার ১৭-১৮; ছহীহুল জামে‘ হা/৯৪৮)। সর্বোপরি কুরআন ও সুন্নাহর প্রকৃত মর্মার্থ উদঘাটন করা আল্লাহর বিশেষ রহমতেই সম্ভব। আর আল্লাহ যাকে চান তার রহমতের জন্য খাছ করে নেন (বাক্বারাহ ২/১০৫

প্রশ্নকারী : আব্দুল্লাহ, জীবননগর, চুয়াডাঙ্গা।






বিষয়সমূহ: বিধি-বিধান
প্রশ্ন (২৫/৩৮৫) : মিথ্যা সার্টিফিকেট ও মিথ্যা অভিজ্ঞতা সনদ দিয়ে চাকুরী নিলে উক্ত উপার্জন হালাল হবে কি? - -ফারূক হোসাইন, টাঙ্গাইল।
প্রশ্ন (৩৭/১৯৭) : ইদ্দতকালে নারীরা ছালাত আদায়ের জন্য বেরিয়ে মসজিদে যেতে পারবে কি? - -মুমিনুল ইসলাম, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
প্রশ্ন (২৩/৪৬৩) : আমি বড় ছেলের কথা শুনে ত্রাণ আত্মসাৎ করেছি, জমি লুটপাট করেছি এবং দুর্বলদের উপর অত্যাচার করেছি। এখন সমাজের লোকেরা আমাকে সমাজ থেকে বহিষ্কার করেছে। সূরা মায়েদার ৩৩নং আয়াত অনুযায়ী আমাকে বহিষ্কার করা ঠিক হয়েছে কি?
প্রশ্ন (৫/১৬৫) : শুনেছি মানুষের রক্ত ভক্ষণ হারাম। কিন্তু আমার দাতে সমস্যা থাকায় মাঝে মাঝে রক্ত বের হয়ে খাবারের সাথে ভিতরে চলে যায়। এটা হারাম ভক্ষণের শামিল হবে কি? - -রাজীবুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা।
প্রশ্ন (১০/২৯০) : আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে কুরআনের প্রথম পাঁচটি আয়াত নাকি লিখিতভাবে নাযিল হয়েছিল। একথার কোন সত্যতা আছে কি? - এমদাদুল ইসলাম পশ্চিম বঙ্গ, ভারত।
প্রশ্ন (৩৭/১৫৭) : থার্টিফার্স্ট নাইট, ভালোবাসা দিবস, নববর্ষ ইত্যাদি পালন করা যাবে কি?
প্রশ্ন (২৫/৬৫) : আমার স্বামী প্রবাসে থাকেন। আমার এক ভুলের কারণে উনি ঠান্ডা মাথায় জেনে-বুঝে আমাকে এক তালাক দেন। তখন আমি ঋতু অবস্থায় ছিলাম। উনি সেটা জানতেন না। এমতাবস্থায় উক্ত তালাক পতিত হয়েছে কি?
প্রশ্ন (৩৪/৪৭৪) : বিবাহের ক্ষেত্রে বর্তমানে বৃহৎ আকারে ওয়ালীমা করার যে সামাজিক রীতি প্রচলিত রয়েছে, এরূপ ব্যয়বহুল অনুষ্ঠান কি অপচয়ের অন্তর্ভুক্ত হবে? - -মাহমূদুল হাসান, রংপুর।
প্রশ্ন (৬/১৬৬) : ‘তিনটি ক্ষেত্রে মিথ্যা কথা বলা যায়’ কথাটির সত্যতা আছে কি? থাকলে কোন কোন ক্ষেত্রে? - -সাইফুল ইসলাম, বিনোদপুর, বাঘা, রাজশাহী।
প্রশ্ন (২৪/১৪৪): অধিক অর্থ উপার্জনের জন্য বিদেশে ইয়াহূদী-নাছারাদের অধীনে চাকুরী করা যাবে কি? অমুসলিমদের অধীনে কাজ করার ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ) এবং ছাহাবায়ে কেরামের কোন আমল পাওয়া যায় কি?
প্রশ্ন (২৮/৬৮) : ‘আমার উম্মতের মধ্যে সবার আগে আমি মদীনাবাসীর জন্য শাফা‘আত করব, অতঃপর মক্কাবাসীর, অতঃপর ত্বায়েফবাসীর জন্য’-মর্মে ত্বাবারাণীতে বর্ণিত হাদীছটি ছহীহ কি? - -রোকনুয্যামান, সরকারী আযীযুল হক কলেজ, বগুড়া।
প্রশ্ন (২৭/২৬৭) : বিবাহের কেবল আকদ সম্পন্ন হয়েছে কিন্তু অলীমা হয়নি। এরূপ অবস্থায় স্ত্রীর সাথে নির্জনবাস জায়েয হবে কি?
আরও
আরও
.