উত্তরঃ মৌলিকভাবে দু’টি পদ্ধতিতে যৌথ ব্যবসা করা শরী‘আত সম্মত। একটির নাম ‘মুশারাকাহ’ (مشاركة) অর্থাৎ শরীকানা ব্যবসা। এতে যার যেমন অর্থ থাকবে, সে তেমন লভ্যাংশ পাবে (আবুদাঊদ হা/৪৮৩৬; সনদ ছহীহ, বুলূগুল মারাম হা/৮৭০; নায়ল হা/২৩৩৪-৩৫)। অপরটির নাম ‘মুযারাবাহ’ (مضاربة) অর্থাৎ একজনের অর্থ নিয়ে অপর জন ব্যবসা করবে। এ পদ্ধতিতে লভ্যাংশ তাদের মাঝে চুক্তিহারে বন্টিত হবে (দারাকুৎনী হা/৩০৭৭; মুওয়াত্ত্বা হা/২৫৩৫; ইরওয়াউল গালীল হা/১৪৭২, ৫/২৯২ পৃঃ; বুলূগুল মারাম হা/৮৯৫, মওকূফ ছহীহ)। প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যবসা এ দু’য়ের অন্তর্ভুক্ত নয়।

সঊদী আরবের জাতীয় গবেষণা ও ফাতাওয়া বিভাগের স্থায়ী কমিটি (লাজনা দায়েমাহ) এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে যে, পিরামিড স্কীম, নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বা এমএলএম যে নামেই হোক না কেন এ ধরনের সকল প্রকার লেনদেন নিষিদ্ধ। কেননা এর উদ্দেশ্য হ’ল, কোম্পানীর জন্য নতুন নতুন সদস্য সৃষ্টির মাধ্যমে কমিশন লাভ করা, পণ্যটি বিক্রি করে লভ্যাংশ গ্রহণ করা নয়। এ কারবার থেকে বহুগুণ কমিশন লাভের প্রলোভন দেখানো হয়। স্বল্পমূল্যের একটি পণ্যের বিনিময়ে এরূপ অস্বাভাবিক লাভ যে কোন মানুষকে প্ররোচিত করবে। আর এতে ক্রেতা-পরিবেশকদের মাধ্যমে কোম্পানী এক বিরাট লাভের দেখা পাবে। মূলতঃ পণ্যটি হ’ল কোম্পানীর কমিশন ও লাভের হাতিয়ার মাত্র।

বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের নেটওয়ার্ক ব্যবসা অসম মূল্য নির্ধারণ ও অতিরঞ্জিত আয়ের প্রলোভন দেখানোর কারণে অভিযুক্ত হয়েছে। আমেরিকার ফেডারেল ট্রেড কমিশন (FTC) ২০০৮ সালের মার্চ মাসে তাদের প্রস্তাবিত ব্যবসায় সুযোগ সম্বন্ধীয় তালিকা থেকে এমএলএম কোম্পানীগুলোর নাম বাদ দিয়েছে। সংস্থাটি গ্রাহকদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, নতুন সদস্য সংগ্রহের মাধ্যমে কমিশন গ্রহণ করার এই রীতি (এমএলএম) বিশ্বের অধিকাংশ দেশে পিরামিড স্কীম পদ্ধতির ন্যায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে (দ্রঃ Multi-level marketing-উইকিপিডিয়া)। তত্ত্বগতভাবেও এ ধরনের মার্কেটিং বিষয়ে অনেক আপত্তি রয়েছে। কেননা এ মার্কেটিং-কে বলা হয়েছে, ‘MLM is like a train with no brakes and no engineer headed full-throttle towards a terminal.’ অর্থাৎ ‘সর্বোচ্চ গতিতে স্টেশনমুখী একটি ট্রেনের মত যার কোন ব্রেক নেই, নেই কোন চালক’ (দ্রঃ www.vandruff.com/mlm.html)।

সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকেও এ ‘ব্যবসা’ সমর্থন করা যায় না। কেননা একজন গ্রাহককে তার আত্মীয় ও বন্ধু-বান্ধবদের বশীভূত করে পণ্য বিক্রয় করতে বলা হয়। ফলে গ্রাহক ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। মানুষের সাথে অন্তরঙ্গ আত্মীয়তা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ককে সে ব্যবসায়িক স্বার্থ চরিতার্থের কেন্দ্রে পরিণত করে। এ সম্পর্ক তখন হয়ে যায় যান্ত্রিক। নিষ্কলুষ বন্ধুত্বের স্থলে তখন সন্দেহ আর সংকীর্ণতাবোধ স্থান করে নেয়। নিজ গৃহ পরিণত হয় মার্কেট প্লেসে। যে কোন সুস্থ বিবেকসম্পন্ন লোক এ কাজে ঘৃণাবোধ করবে।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, হালাল স্পষ্ট, হারামও স্পষ্ট। এর মধ্যবর্তী বিষয়সমূহ অস্পষ্ট, যা অনেক মানুষ জানে না। অতএব যে ব্যক্তি সন্দিগ্ধ বস্ত্তসমূহ থেকে বেঁচে থাকবে, সে ব্যক্তি তার দ্বীন ও সম্মানকে পবিত্র রাখলো। আর যে ব্যক্তি সন্দিগ্ধ কাজে লিপ্ত হ’ল, সে হারামে পতিত হ’ল (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৬২)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, সন্দিগ্ধ বিষয় পরিহার করে নিঃসন্দেহ বিষয়ের দিকে ধাবিত হও। কেননা সত্যে রয়েছে প্রশান্তি এবং মিথ্যায় রয়েছে সন্দেহ’ (তিরমিযী হা/২৫৮১; সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/২৭৭৩)

অতএব আমাদের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত এই যে, প্রশ্নে উল্লেখিত নামে বা অন্য নামে প্রচলিত এম.এল.এম ব্যবসা সমূহ শরী‘আত সম্মত হবে না। জান্নাত পিয়াসী মুমিনকে এসব থেকে বেঁচে থাকতে হবে (বিস্তারিত দেখুনঃ আত-তাহরীক, ডিসেম্বর ২০০৮ প্রশ্নোত্তর : ২/৮২ ডেসটিনি২০০০ ব্যবসা কি জায়েয? 






প্রশ্ন (২/১৬২) : চোখের পাপ থেকে বাঁচার উপায় কি?
প্রশ্ন (২০/২৬০) : জনৈক ব্যক্তি সমাজে অনেক শিরক ও বিদ‘আতের প্রচলন ঘটিয়েছে এবং মানুষ তা আমল করে চলেছে। পরবর্তীতে ঐ ব্যক্তি বিশুদ্ধ দ্বীনের পথে ফিরে এসেছে। এক্ষণে ঐ ব্যক্তি কি সমাজের লোকদের পাপের অংশ পেতে থাকবে? এক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তির পরিত্রাণের উপায় কি?
প্রশ্ন (২১/৩৪১) : ওযূ করার সময় কানের কতটুকু পরিমাণ মাসাহ করতে হবে?
প্রশ্ন (১৭/৫৭) : অসুস্থতার কারণে আমি টানা ৩/৪ মাস ছালাত আদায় করতে পারিনি। এক্ষণে সুস্থতা লাভের পর আমাকে উক্ত ছালাত সমূহের ক্বাযা আদায় করতে হবে কি? - -শাহ মুহাম্মাদ হাবীবুর রহমান, কাজলা, রাজশাহী।
প্রশ্ন (৩৬/৩৯৬) : হজ্জ থেকে ফিরে আসা উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা যাবে কি? - -হারূণুর রশীদ, বংশাল, ঢাকা।
প্রশ্ন (১১/১৩১) : ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে পণ্য বাকিতে বিক্রয়ের পর মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে মাসিক বা বার্ষিক বিলম্ব ফী গ্রহণ করা যাবে কি? যেমন প্রথম বছরের মধ্যে পরিশোধ করলে কেবল মূল্য পরিশোধ করতে হবে। তারপর প্রতি বছর ৫ হাযার টাকা করে জরিমানা যুক্ত হবে। এভাবে না করলে মানুষ অর্থ ফেরৎ দিতে অবহেলা করে। রাষ্ট্রীয় আইনের শিথিলতার কারণে অর্থ আদায়ের তেমন কোন উপায়ও থাকে না। এক্ষণে এটা জায়েয হবে কি?
প্রশ্ন (১৩/৫৩) : অন্যের ভ্রুণ নষ্ট করার পাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় জানতে চাইলে জনৈক আলেম এর কাফফারা হিসাবে দু’মাস ছিয়াম পালন এবং তওবা করতে বলেন। উক্ত বক্তব্য কি শরী‘আত সম্মত?
প্রশ্ন (৮/২০৮) : আমি দাড়ি রাখার নিয়ত করার পর দেখি একপাশে ঘন হয়ে উঠেছে কিন্তু অন্য পাশে খুবই সামান্য। অনেকেই পরামর্শ দিচ্ছে কয়েকবার ক্লিন সেভ করলে ঠিক হয়ে যাবে। এক্ষণে আমার করণীয় কি?
প্রশ্ন (৪০/৪০০) : মাসবূক যদি দ্বিতীয় রাক‘আতে ইমামের সাথে যোগদান করে আর ইমাম ভুল করে পাঁচ রাক‘আত ছালাত আদায় করে সালাম ফিরায়, তাহ’লে মাসবূক কি ইমামের সাথে সালাম ফিরাবে? না আরো এক রাক‘আত আদায় করে সালাম ফিরাবে? একইভাবে ইমাম যদি ভুলবশতঃ তৃতীয় রাক‘আত শেষে সালাম ফিরায় এবং পরক্ষণে দাঁড়িয়ে অবশিষ্ট রাক‘আত আদায় করে, সেক্ষেত্রে মাসবূক কি করবে? - -আব্দুল্লাহ আল-মামূনছোট বনগ্রাম, রাজশাহী।
প্রশ্ন (১২/৯২) : আত-তাহরীক একাধিকবার ফৎওয়া প্রদান করেছে যে, ইসলামী ব্যাংকের সাথে লেনদেন সূদের পর্যায়ভুক্ত। অথচ এর বিকল্প কোন সমাধান দেওয়া হয় না। তাহ’লে কি ইসলাম অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অপূর্ণাঙ্গ? না-কি ফৎওয়া বোর্ডের ব্যর্থতা? - -মকবূল হোসাইন, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
প্রশ্ন (২৩/১০৩) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ খুব জঘন্য। একদিকে হলের বাধ্যতামূলক অসুস্থ রাজনীতি, অন্যদিকে নগ্নতার ছোবল। নাস্তিকতার আগ্রাসন তো আছেই। এমন প্রতিকূল পরিবেশের সাথে লড়াই করা সত্ত্বেও ঈমান হারানোর ঝুঁকি থাকে। এমতাবস্থায় সাধারণভাবে আমল করে টিকে থাকা উত্তম হবে, না ভাল পরিবেশে থাকা উত্তম হবে? এ জন্য অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করলে তাক্বদীরের কোন পরিবর্তন হবে কি ?
প্রশ্ন (২১/২২১) : মুছল্লীরা কি ছালাতের জন্য ইক্বামতের আগেই কাতার দিতে পারে? - -আব্দুল জাববার, কাহারোল, দিনাজপুর।
আরও
আরও
.