উত্তর : অত্র
হাদীছটি আল্লাহর গুণাবলী সম্পর্কিত হাদীছ সমূহের (أحاديث الصفات)
অন্তর্ভুক্ত। এ হাদীছে আল্লাহর আঙ্গুলসমূহের বর্ণনা এসেছে। এখানে যেভাবে
বর্ণিত হয়েছে, সেভাবে বিশ্বাস করাটাই হ’ল ছাহাবায়ে কেরাম ও আহলেসুন্নাত
ওয়াল জামা‘আত আহলেহাদীছের আক্বীদা। আল্লাহর আঙ্গুল বা তাঁর আকার সেইরূপ,
যেরূপ তাঁর উচ্চ মর্যাদার উপযোগী। আল্লাহ বলেন, ‘তাঁর তুলনীয় কিছুই নেই।
তিনি সর্বদ্রষ্টা ও সর্বশ্রোতা (শূরা ৪২/১১)। এবিষয়ে ঝগড়াকারীগণ
পথভ্রষ্ট। নিরাকারবাদীগণ মু‘আত্ত্বিলাহ (শূন্য সত্তার উপাসনাকারী)।
সাদৃশ্যবাদীগণ মুশাবিবহাহ (স্রষ্টাকে সৃষ্টির সদৃশ কল্পনাকারী)। এবিষয়ে
সঠিক আক্বীদা সেটাই যা ছাহাবায়ে কেরামের আক্বীদা। অতঃপর অত্র হাদীছের
তাৎপর্য হ’ল এই যে, এর মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার অন্তরকে দ্রুত পরিবর্তনের
কথা বর্ণনা করেছেন। আর এটা তাঁর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। আঙ্গুল বলার মাধ্যমে
হাত দ্বারা অাঁকড়ে ধরা বুঝানো হয়েছে। কেননা আঙ্গুল হাতেরই অংশ। ‘বনু আদমের
অন্তুরসমূহ একটি কলবের ন্যায়’ বলার মাধ্যমে আল্লাহ সকল সৃষ্টিকে একটি
কলবের ন্যায় সহজে ও দ্রুত সৃষ্টি বুঝিয়েছেন। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের
সকলের সৃষ্টি ও পুনরুত্থান একটিমাত্র প্রাণীর সৃষ্টি ও পুনরুত্থানের
অনুরূপ। আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা’ (লোকমান ৩১/২৮)। এর মাধ্যমে আল্লাহর অসীম ক্ষমতা বুঝানো হয়েছে (মির‘আত হা/৮৯-এর ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য)। তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন (বুরূজ ৮৫/১৬)। তবে
এর দ্বারা মানুষকে বাধ্যগত প্রাণী ভাবা যাবে না। যেমনটি ভ্রান্ত ফের্কা
অদৃষ্টবাদী জাবরিয়াগণ ভেবে থাকেন। কেননা আল্লাহ বান্দার তাক্বদীর জানেন।
কিন্তু বান্দা তা জানেনা। তাই তাকে সাধ্যমত আল্লাহর পথে কাজ করে যেতে হবে।
আল্লাহ বলেন, ‘বান্দা কেবল সেটাই পায়, যেটার জন্য সে চেষ্টা করে’ (নাজম ৫৩/৩৯)।