উত্তরঃ সিজদায় যাওয়ার সময় মাটিতে আগে হাত রাখতে হবে এবং পরে হাঁটু রাখতে হবে। এটাই ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ সিজদা করে, তখন সে যেন উটের মত না বসে। বরং সে যেন তার উভয় হাত উভয় হাঁটুর পূর্বে মাটিতে রাখে’ (আবুদাঊদ, নাসাঈ, দারেমী, মিশকাত হা/৮৯৯; ‘সিজদা ও তার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ, সনদ ছহীহ)। এই হাদীছকে কেন্দ্র করেই দু’টি মতের সূত্রপাত হয়েছে। কারণ বাহ্যিক দৃষ্টিতে দেখা যায় যে, হাদীছটির প্রথম অংশ শেষ অংশের বিরোধী। কেননা উটের বসা গরু-ছাগলের বসা থেকে ভিন্ন নয়। চতুষ্পদ জন্তুর সামনের দু’টিকে হাত ও পেছনের দু’টিকে পাঁ বলা হয়। গরু-ছাগল যেমন বসার সময় প্রথমে হাত বসায়, উটও তেমন বসার সময় প্রথমে হাত বসায়। অথচ হাদীছের প্রথম অংশে উটের মত বসতে নিষেধ করা হয়েছে। অর্থাৎ রুকূ থেকে সিজদায় যাওয়ার সময় প্রথমে হাত রাখতে নিষেধ করা হয়েছে এবং হাদীছের শেষ অংশে রুকূ থেকে সিজদায় যাওয়ার সময় প্রথমে হাত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) সহ যাঁরা সিজদায় যাওয়ার সময় প্রথমে হাঁটু রাখার পক্ষে মত প্রকাশ করেন তাদের যুক্তি হ’ল, যেহেতু হাদীছের প্রথম অংশ শেষ অংশের বিরোধী, সেহেতু রাবী হাদীছটি বর্ণনার সময় শেষ অংশকে প্রথম অংশের উল্টা করে ফেলেছেন। মূলত হাদীছটির শেষ অংশ হবে ‘সে যেন হাতের পূর্বে হাঁটু রাখে’।

কিন্তু এই যুক্তি ঠিক নয়। কারণ চতুষ্পদ জন্তুর হাতেই হাঁটু। যার প্রমাণে হাদীছে এসেছে, যখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও আবু বকর (রাঃ) হিজরতের উদ্দেশ্যে মক্কা থেকে মদীনার দিকে রওয়ানা হন, তখন কুরাইশ নেতারা রাসূল (ছাঃ)-কে হত্যা করতে পারলে একশত উট পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয়। এই পুরস্কারের লোভে সুরাকাহ বিন জু‘শুম ঘোড়া ছুটিয়ে যখন রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটবর্তী হ’ল, তখন সে বলে যে, سَاخَتْ يَدَا فَرَسِيْ فِي الأَرْضِ حَتَّى بَلَغَتَا الرُّكْبَتَيْنِ ‘আমার ঘোড়ার হাত দু’টি হাঁটু পর্যন্ত মাটিতে দেবে গেল’ (বুখারী হা/৩৯০৬)। জাহেয বলেন, চতুষ্পদ জন্তুর হাঁটু হ’ল হাতে এবং মানুষের হাঁটু হ’ল পায়ে (জাহেয, কিতাবুল হায়ওয়ান, ২/৩৫৫ পৃঃ)। ইমাম ত্বাহাবী (রহঃ) বলেন, উটের হাঁটু হ’ল হাতে, যা মানুষের অনুরূপ নয়’ (ত্বাহাবী, শারহু মা‘আনিল আছার, ১/২৫৪ পৃঃ)। অতএব প্রমাণিত হ’ল যে, উট ও অন্যান্য চতুষ্পদ জন্তুর হাতেই হাঁটু। সুতরাং রাসূল (ছাঃ) রুকূ থেকে সিজদায় যাওয়ার সময় উটের মত প্রথমে হাঁটু না দিয়ে হাত রেখে সিজদায় যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

এছাড়াও আবদুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) থেকে ছহীহ মরফূ রেওয়ায়াত এসেছে এই মর্মে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সিজদা কালে হাঁটুর পূর্বে মাটিতে হাত রাখতেন’ (হাকেম হা/৮২১, ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৬২৭; সনদ ছহীহ, আলবানী, মিশকাত ১/২৮২ পৃঃ, টীকা নং ১)

ইমাম আওযাঈ বলেন, আমি লোকদেরকে পেয়েছি এই অবস্থায় যে, তারা স্বীয় হস্তগুলিকে তাদের হাঁটুর পূর্বে রাখত। ইমাম মারওয়াযী উক্ত আছারটি স্বীয় ‘মাসায়েল’ গ্রন্থে (১/১৪৭/১) ছহীহ সনদে সঙ্কলন করেছেন (আলবানী, ছিফাতু ছালাতিন নবী (ছাঃ), পৃঃ ১২২)। উল্লেখ্য যে, নবী করীম (ছাঃ) সিজদায় যাওয়ার সময় হাঁটু আগে রাখতেন বলে দারেমী ও সুনান চতুষ্টয়ের বরাতে ওয়ায়েল বিন হুজর (রাঃ) থেকে মিশকাতে (হা/৮৯৮) যে বর্ণনাটি সঙ্কলিত হয়েছে, তা যঈফ। তাছাড়া আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হাদীছটি ক্বওলী ও ওয়ায়েল (রাঃ) বর্ণিত হাদীছটি ফে‘লী। দলীল গ্রহণের সময় ক্বওলী হাদীছ অগ্রগণ্য হয়ে থাকে। যাদুল মা‘আদের ভাষ্যকার শু‘আয়েব আরনাঊত্ব ও আব্দুল কাদের আরনাঊত্ব আগে হাঁটু রাখার পক্ষে হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম প্রদত্ত সকল প্রমাণাদি আলোচনা শেষে মন্তব্য করেন যে, লেখকের সকল দলীল তাঁর বিপক্ষে গিয়েছে। আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত আগে হাত রাখার হাদীছ নিঃসন্দেহে ছহীহ এবং ওয়ায়েল বিন হুজর (রাঃ) বর্ণিত আগে হাঁটু রাখার হাদীছ যঈফ (যাদুল মা‘আদ (বৈরূত ১৪১৬/১৯৯৬) ১/২২৩ টীকা-১) ইবনু হাযম আগে হাত রাখাকে ফরয ও অপরিহার্য বলেছেন (মুহাল্লা, মাসআলা নং ৪৫৬)।






প্রশ্ন (১৭/৩৫৭) : যাকাতের সম্পদ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেওয়ার নিয়ত করে আমার নিকট থেকে ঋণগ্রহীতাকে কিছু ঋণ মাফ করে দেওয়া যাবে কি? - -আহমাদ, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
প্রশ্ন (২৪/৪২৪) : ভাড়া পাওয়ার জন্য মসজিদের ছাদে মোবাইল টাওয়ার স্থাপনে কোন বাধা আছে কি?
প্রশ্ন (১৭/১৭৭) : জনৈক ব্যক্তি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫ লক্ষ টাকা ১ বছরের জন্য বিনিয়োগ হিসাবে চান। বিনিময়ে তিনি চার কিস্তিতে পরবর্তী একবছরে মোট পাঁচ লক্ষ ৫০ হাযার টাকা এবং সাথে মাসিক মুনাফা পরিশোধ করবেন। এরূপ লেনদেন শরী‘আতসম্মত হবে কি?
প্রশ্ন (১৩/৩৩৩) : আমার স্ত্রী নিজের ইচ্ছামত পর্দা করে। মাহরাম, গায়ের-মাহরামের ব্যাপারে কোন সাবধানতা অবলম্বন করে না। এ ব্যাপারে শারঈ বিধান বুঝাতে গেলে পরিবারে নানা অশান্তি সৃষ্টি করে। এক্ষণে শান্তি বজায় রাখার জন্য তাকে তার মত চলতে দিলে আমাকে দাইয়ূছ হিসাবে গোনাহগার হ’তে হবে কি?
প্রশ্ন (১৯/২১৯) : রাতে ঘুমানোর সময় ওযূ করার বিশেষ কোন ফযীলত আছে কি?
প্রশ্ন (২৯/৬৯) : যোহর, আছর, মাগরিব একত্রে জমা-ক্বছর করার ক্ষেত্রে অথবা ক্বাযা আদায়ের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যরূরী কি? - -আব্দুল্লাহ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
প্রশ্ন (৩৮/১৯৮) : হাক্কুল ইবাদ তথা যেসব পাপ করলে মানুষের কাছেই ক্ষমা চাইতে হয়, এরূপ কাজ সম্পর্কে দলীলসহ জানতে চাই।
প্রশ্ন (৩/৪০৩) : স্ত্রীর উপস্থিতিতে তার আপন ভাগ্নীকে বিয়ে করা যাবে কি?
প্রশ্ন (৩১/৪৭১): পিতা-মাতা আক্বীক্বা করে নাম রেখেছে। সন্তান বড় হয়ে বুঝতে পারলো যে, তার নাম অর্থহীন। এমতাবস্থায় তার নাম কি পরিবর্তন করা যাবে?
প্রশ্ন (১৭/২৫৭) : সকল নবী-রাসূল কি হজ্জ পালন করেছেন?
প্রশ্ন (২২/৩৮২) : উত্তর মেরুতে অবস্থিত সুইডেনের কিরুনা শহরে রামাযানের ১৫-২০ দিন সূর্যাস্ত হবে না। এক্ষণে এ অঞ্চলে অবস্থানকারী মুসলিমগণ কিভাবে ছিয়াম রাখবেন?
প্রশ্ন (৩/৩৬৩) : মসজিদের ইমাম ছাহেব ছাত্রীরা বেপর্দায় চলে এরূপ সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন। এটা জায়েয হবে কি? এছাড়া যেসব এলাকায় প্রতিবেশী বেপর্দা নারীরা চলাফেরা করে, সেসব এলাকায় বাস করা জায়েয হবে কি?
আরও
আরও
.