উত্তর : উক্ত বক্তব্য সঠিক (বুখারী হা/৩০১৭, ৬৯২২ তিরমিযী হা/১৪৫৮)।
তারা ছিল ইহুদী থেকে আগত রাফেযী শী‘আ সাবাঈ গোষ্ঠীভুক্ত। তারা গোপনে
মূর্তিপূজা করত। আলী (রাঃ) তাদেরকে ডেকে জিজ্ঞেস করলে তারা বলল, আপনি
আমাদের রব, খালেক ও রাযেক (পালনকর্তা, সৃষ্টিকর্তা ও রূযিদাতা)। তিনি
তাদেরকে সাধ্যমত বুঝান, ধমকান ও হত্যা করার হুমকি দেন। এভাবে চতুর্থবারেও
তারা তাদের ঘোষণায় অটল থাকলে এবং তওবা না করলে তিনি তাদেরকে ‘মুরতাদ’
হিসাবে এক বর্ণনায় এসেছে তাদেরকে প্রথমে হত্যা করেন ও পরে গর্তে ফেলে
পুড়িয়ে দেন। অন্য বর্ণনায় এসেছে, সরাসরি জীবন্ত গর্তে ফেলে পুড়িয়ে হত্যা
করেন (ফাৎহুল বারী দ্রঃ হা/৬৯২২-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ ১২/২৮২)।
মুরতাদকে পুড়িয়ে হত্যা করার ব্যাপারে ওলামায়ে সালাফের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। হযরত ওমর ও ইবনে আববাস (রাঃ) প্রমুখ ছাহাবীগণ পুড়িয়ে মারার বিপক্ষে মত প্রকাশ করেন। চাই সেটা কুফরীর কারণে হৌক কিংবা যুদ্ধ বা হত্যার বদলা হিসাবে হৌক। মুহাল্লাব বলেন, হাদীছে পুড়িয়ে মারার যে নিষেধাজ্ঞা এসেছে, তা হ’ল করুণা বশে। অতঃপর পক্ষের দলীল হিসাবে রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক উরানীদের উত্তপ্ত লৌহ শলাকা দিয়ে চোখ পুড়িয়ে দেওয়া, হযরত আবুবকর (রাঃ) কর্তৃক ছাহাবীগণের সম্মুখে বিদ্রোহীদের আগুনে পুড়িয়ে মারা, খালেদ বিন ওয়ালীদ (রাঃ) কর্তৃক একদল মুরতাদকে পুড়িয়ে মারা ইত্যাদি ঘটনা পেশ করা হয় (ফাৎহুল বারী হা/৩০১৭-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ ৬/১৭৪)।
উপরোক্ত আলোচনায় দু’টি বিষয় প্রতিভাত হয় : (১) এধরনের যেকোন শাস্তি দায়িত্বশীল সরকার আদালতের মাধ্যমে দিতে পারে। অন্য কোন ব্যক্তি বা দল নয়। (২) পাপের ধরন অনুযায়ী শাস্তি দিতে হবে। ইসলামী দন্ডবিধি সকল যুগের জন্য প্রযোজ্য এবং কল্যাণকর। এটি মুমিনের জন্য পাপমোচনকারী এবং আখেরাতে উপকারী (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৮)। সর্বোপরি এগুলি সামাজিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার অন্যতম প্রধান উপায়।