উত্তর : জামা‘আত অর্থ দল। আর হাদীছে বর্ণিত জামা‘আত বলতে ছাহাবায়ে কেরাম এবং তাঁদের আক্বীদা, আমল ও রীতি-পদ্ধতির সনিষ্ঠ অনুসারীদের বুঝায় (মির‘আত ১/২৭৮, মিশকাত হা/১৭১-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)।
খ্যাতনামা ছাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ)-এর কাছে রাসূল (ছাঃ)
বর্ণিত ‘আল-জামা‘আত’ অর্থ কি- একথা জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, ‘হক-এর
অনুগামী দলই জামা‘আত, যদিও তুমি একাকী হও’ (তারীখু দিমাশ্ক্ব, সনদ ছহীহ; হাশিয়া মিশকাত আলবানী, হা/১৭৩)।
এক্ষণে নাজাতপ্রাপ্ত জামা‘আতের বৈশিষ্ট্যসমূহ হ’ল- (১) তারা সর্বদা পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের প্রকাশ্য অর্থের অনুসারী হবেন এবং ছাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে ছালেহীনের বুঝ অনুযায়ী শরী‘আত ব্যাখ্যা করবেন (তিরমিযী হা/২৬৪১; মিশকাত হা/১৭১)। বিশেষতঃ আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে তারা কোন রূপক অর্থের আশ্রয় নিবেন না। (২) আক্বীদার ক্ষেত্রে তারা সর্বদা মধ্যপন্থী হবেন এবং কখনোই চরমপন্থী বা শৈথিল্যবাদী হবেন না (বাক্বারাহ ২/১৪৩)। (৩) তাঁরা সংস্কারক হবেন (আহমাদ, মিশকাত হা/১৫৯, ১৭০; ছহীহাহ হা/১২৭৩)। (৪) তারা কুফর ও কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ও শক্তিশালী থাকেন এবং নিজেদের মধ্যে সর্বদা রহমদিল ও আল্লাহর প্রতি বিনীত থাকেন (ফাৎহ ৪৮/২৯, হজ্জ ২২/৩৪)। (৫) তারা জামা‘আতবদ্ধভাবে আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রাম করেন এবং কখনোই উদ্ধত ও বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী হন না (ছফ ৬১/৪, তিরমিযী হা/২১৬৫)। (৬) তাঁরা যেকোন মূল্যে সুন্নাতকে অাঁকড়ে থাকেন ও বিদ‘আত হ’তে দূরে থাকেন (ছহীহুল জামে‘ হা/২২৩৪, মিশকাত হা/১৬৫)। (৭) তারা আপোষহীনভাবে সমাবেতভাবে হাবলুল্লাহকে ধারণ করে থাকেন এবং কখনোই তা থেকে বিচ্ছিন্ন হন না (আলে ইমরান ৩/১০৩)। (৮) তারা মানুষের সাথে সদ্ব্যবহার করেন এবং আপোষে মহববতের সম্পর্ক অটুট রাখেন। (৯) তারা ব্যাখ্যাগত মতভেদ-কে লঘু করে দেখেন এবং কখনোই তাকে দলীয় বিভক্তিতে পরিণত করেন না। (১০) তারা সর্বদা উত্তম মুমিন হওয়ার জন্য চেষ্টিত থাকেন এবং এজন্য সর্বদা আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করেন (বিস্তারিত দ্রঃ ‘ফিরক্বা নাজিয়াহ’ বই ২৫ ও ৫৪ পৃঃ)।
-আকমাল হোসাইন, চারঘাট, রাজশাহী।