উত্তর :
ইসলামী পরিভাষায় ‘জিহাদ’ অর্থ- আল্লাহ্র পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো’
এবং ‘ক্বিতাল’ অর্থ- আল্লাহ্র পথে কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ
করা’। দু’টি শব্দ অনেক সময় একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। তবে ক্বিতাল শব্দটি
নির্দিষ্ট অর্থবোধক এবং জিহাদ ব্যাপক অর্থবোধক। অর্থগত ব্যাপকতার কারণে
কখনো পিতা-মাতার খেদমত করাকে অন্যতম জিহাদ বলা হয়েছে, কখনো কুপ্রবৃত্তি ও
শয়তানের কুমন্ত্রণার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করাকে জিহাদ বলা হয়েছে। অনুরূপ
শাসকের নিকট হক কথা বলাকে সর্বোত্তম জিহাদ বলা হয়েছে (আনকাবূত ৬; বুখারী হা/৫৯৭২, ৬৪৯৪; তিরমিযী, হা/১৬৭১; মিশকাত হা/৩৭০৫)।
বাতিলের বিরুদ্ধে জিহাদ সর্বাবস্থায় ফরয। তবে সেটি স্থান-কাল-পাত্র ভেদে কখনো নিরস্ত্র হবে, কখনো সশস্ত্র হবে। নিরস্ত্র জিহাদ মূলতঃ প্রজ্ঞাপূর্ণ দাওয়াত ও হক-এর উপরে দৃঢ় থাকার মাধ্যমে হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে ক্বিতালের জন্য অনুকূল পরিবেশ, পর্যাপ্ত সামর্থ্য, বৈধ কর্তৃপক্ষ এবং আল্লাহ্র পথে নির্দেশ দানকারী আমীরের প্রয়োজন হবে। নইলে ছবর করতে হবে এবং সম্ভবপর আমর বিল মা‘রূফ ও নাহি ‘আনিল মুনকারের মৌলিক দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে।
শান্তিপূর্ণ অবস্থায় কুরআন, হাদীছ, বিজ্ঞান, যুক্তি-প্রমাণ ও প্রজ্ঞাপূর্ণ পন্থায় ইসলামকে অন্যান্য দ্বীনের উপরে বিজয়ী করার সংগ্রামকে বলা হবে ‘জিহাদ’। যাকে এযুগে ‘চিন্তার যুদ্ধ’ (الْغَزْوُ الْفِكْرِيُّ) বলা হয়। এই জিহাদে দৃঢ় ও আপোষহীন থাকা এবং জান-মাল ব্যয় করা নিঃসন্দেহে জান্নাত লাভের উত্তম অসীলা হবে। (বিস্তারিত দেখুন : ‘জিহাদ ও ক্বিতাল’ বই)।