উত্তর :
মহামারীর বিস্তৃতি রোধে মসজিদের জামা‘আত বন্ধ থাকাবস্থায় জুম‘আর ছালাতের
পরিবর্তে বাড়িতে যোহরের ছালাত আদায় করা জায়েয। কারণ এমতাবস্থায় মসজিদে
একত্রিত হ’লে একে অন্যের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হ’তে পারে। আর ইসলামের মূলনীতি
হ’ল, নিজে ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া এবং অন্যকে ক্ষতিগ্রস্ত না করা (ইবনু মাজাহ হা/২৩৪০; আহমাদ হা/২৮৬৭; ছহীহাহ হা/২৫০)। মহামারীকালীন সতর্কতাস্বরূপ রাসূল (ছাঃ) বলেন, অসুস্থ প্রাণীকে যেন সুস্থ প্রাণীর মাঝে প্রবেশ করানো না হয় (বুখারী হা/৫৭৭১; মুসলিম হা/২২২১)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, কুষ্ঠরোগী হ’তে এমনভাবে পলায়ন কর, যেভাবে তোমরা বাঘ থেকে পলায়ন কর’ (বুখারী হা/৫৭০৭; মিশকাত হা/৪৫৭৭; ছহীহাহ হা/৭৮৩)।
রাসূল (ছাঃ) নিজেও এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতেন। হাদীছে এসেছে-
‘ছাকীফদের প্রতিনিধিদলে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত এক ব্যক্তি ছিল। তখন নবী করীম
(ছাঃ) তার কাছে লোক পাঠিয়ে জানালেন যে, নিশ্চয় আমি তোমার বায়‘আত গ্রহণ
করেছি। অতএব তুমি ফিরে যাও। ফলে তিনি শহরের বাইরে থেকেই বাড়ি ফিরে যান (মুসলিম হা/২২৩১; মিশকাত হা/৪৫৮১; ছহীহাহ হা/১৯৬৮)।
এছাড়াও রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের যুগে অতি বৃষ্টির কারণে মানুষকে
জুম‘আয় অংশগ্রহণের ব্যাপারে অবকাশ দেওয়া হয়েছিল। যেমন ইবনু আববাস (রাঃ)
হ’তে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি তাঁর মুয়াযযিনকে এক প্রবল বর্ষণের দিনে বললেন,
যখন তুমি (আযানে) আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ বলবে,
তখন হাইয়া আলাছ-ছালাহ বলবে না, বলবে, ছাল্লু ফী বুয়ূতিকুম (তোমরা নিজ নিজ
বাসগৃহে ছালাত আদায় কর)। কিন্তু লোকেরা তা অপসন্দ করল। তখন তিনি বললেন,
আমার চেয়ে উত্তম ব্যক্তিই (রাসূল (ছাঃ) তা করেছেন। জুম‘আ নিঃসন্দেহে যরূরী।
তবে আমি অপসন্দ করি তোমাদেরকে মাটি ও কাদার মধ্য দিয়ে যাতায়াত করার
অসুবিধায় ফেলতে (বুখারী হা/৯০১; মুসলিম হা/৬৯৯)।