
উত্তর : উক্ত গ্রন্থসমূহে এসকল বর্ণনা পাওয়া গেলেও এর কোন গ্রহণযোগ্য ভিত্তি নেই। আলবানী বলেন, ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর ব্যাপারে যা বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি এশার ওযূতে চল্লিশ বছর ফজরের ছালাত আদায় করেছেন, তাতে তোমরা প্রতারিত হয়ো না। কারণ তাঁর থেকে এসকল ঘটনার কোন ভিত্তি নেই (আল-ইখতিয়ারাতুল ফিক্বহিইয়াহ ১/১২৩; আছলু ছিফাতি ছালাতিন্নবী ২/৫৩১)। মাজদুদ্দীন ফিরোযাবাদী বলেন, এগুলো ইমাম ছাহেবের প্রতি স্পষ্টভাবে মিথ্যা অপবাদ মাত্র। এরূপ কথা তাঁর দিকে সম্পর্কিত করা সমীচীন নয়। ...এগুলো মূর্খ পক্ষপাতদুষ্টদের রচিত গল্প মাত্র। তবে নিঃসন্দেহে তিনি মুত্তাকী ও ইবাদতগুযার মানুষ ছিলেন (আর-রাদ্দু ‘আলাল মু‘তারিয ১/৪৪)। ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ)-এর প্রধান শিষ্য ইমাম আবু ইউসুফ (রহঃ) বলেন, একদা আবু হানীফা (রহঃ)-এর সাথে হাঁটছিলাম তখন এক লোক বলল, ইনি আবু হানীফা, যিনি রাতে ঘুমান না। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! সে যেন আমার ব্যাপারে এমন কথা বর্ণনা না করে, যা আমি করি না (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৬/৩৯৯; তাহযীবুল কামাল ২৯/৪৩৫; শাযারাতুয যাহাব ২/২৩০)। আল্লামা আব্দুল হাই লাক্ষ্ণৌভী হানাফী (রহঃ) বলেন, ইবাদতে বাড়াবাড়ি স্রেফ বিদ‘আত। যারা এসব কথা বলে, তারা সবচেয়ে বড় বিদ‘আতী ও বড় জাহিল (দ্রঃ মুক্বাদ্দামা শরহে বেক্বায়াহ (দেউবন্দ ছাপা) পৃ. ৩৬-৩৭)। এ ধরনের কল্পিত ঘটনা দ্বারা মূলত ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। অনুরূপ আরো অনেক অলৌকিক ঘটনা তাঁর নামে সমাজে প্রচলিত রয়েছে, যেগুলির কোন ভিত্তি নেই।