উত্তর : উত্তমটিই পালনযোগ্য। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও খুলাফায়ে রাশেদীন থেকে এবং রাসূল (ছাঃ)-এর অন্য কোন স্ত্রী ও ছাহাবী থেকে ১১ বা ১৩ রাক‘আতের ঊর্ধ্বে তারাবীহ বা তাহাজ্জুদের কোন বিশুদ্ধ প্রমাণ নেই (বুখারী হা/১১৪৭; মুসলিম হা/৭৩৮; মুওয়াত্ত্বা, ৭১ পৃঃ, টীকা-৮ দ্রষ্টব্য)। বর্ধিত রাক‘আত সমূহ পরবর্তীকালে সৃষ্ট। ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) রাত্রির ছালাত ১১ বা ১৩ রাক‘আত আদায় করতেন। পরবর্তীকালে মদীনার লোকেরা দীর্ঘ ক্বিয়ামে দুর্বলতা বোধ করে। ফলে তারা রাক‘আত সংখ্যা বৃদ্ধি করতে থাকে, যা ৩৯ রাক‘আত পর্যন্ত পৌঁছে যায়’ (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৩/১১৩)। খ্যাতনামা হানাফী বিদ্বান আনোয়ার শাহ কাষ্মীরী (রহঃ) বলেন, একথা না মেনে উপায় নেই যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর তারাবীহ ৮ রাক‘আত ছিল (আল-‘আরফুশ শাযী শরহ তিরমিযী হা/৮০৬-এর আলোচনা দ্রঃ ২/২০৮ পৃঃ; মির‘আত ৪/৩২১)।
আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর রাসূলের মধ্যে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ নিহিত রয়েছে, (আহযাব ৩৩/২১)। আর রাসূল (ছাঃ) বলেছেন ‘তোমরা ছালাত আদায় কর সেভাবে, যেভাবে আমাকে ছালাত আদায় করতে দেখছ’... (বুখারী হা/৬৩১)। আলবানী বলেন, খাছ হাদীছ চলে আসার পর আম হাদীছের উপর নির্ভর করে অতিরিক্ত (তারাবীহ) ছালাত আদায় করা জায়েয হবে না।... যেমন ফজর, যোহর ইত্যাদি ছালাতের সুন্নাত সমূহের রাক‘আত সংখ্যায় কম-বেশী করা জায়েয নয়’ (তামামুল মিন্নাহ ১/২৫৩)। অতএব তিন রাক‘আত বিতরসহ ১১ বা ১৩ রাক‘আত তারাবীহর ছালাত আদায় করাই তাক্বওয়াশীল মুমিনের কর্তব্য। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ছিলেন ‘সৃষ্টিজগতের প্রতি রহমত স্বরূপ’ (আম্বিয়া ২১/১০৭) এবং বেশী না পড়াটা ছিল উম্মতের প্রতি তাঁর অন্যতম রহমত। সুতরাং রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণের মধ্যেই কল্যাণ ও সকল বিতর্কের সমাধান রয়েছে (বিস্তারিত দ্রঃ ছালাতুর রাসূল ১৭১-১৮১ পৃ.)।