উত্তর : এই উক্তিটি ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব, ইবনু আববাস ও ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে ছহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে। তাঁদের উক্ত বাক্য দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, রাযা‘আত বা দুধ মা কেবল ছোটকালে দুই বছরের মধ্যে দুধ পান করলে সাব্যস্ত হয়। বড় হয়ে বা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে দুধ পান করলে দুধ মা সাব্যস্ত হয় না (আহমাদ হা/৪৪২০; ইবনু আবী শায়বাহ হা/১৭০৫১; মুছান্নাফে আব্দুর রাযযাক হা/১৩৯০৩, সনদ ছহীহ)। রাসূল (ছাঃ) থেকেই বরং এ মর্মে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, দুগ্ধপানের মাধ্যমে ততক্ষণ হারাম হয় যখন দুগ্ধ পাকস্থলীতে প্রবেশ করে এবং সেটা দুধ ছাড়ানোর পূর্বে পান করানো হয় (তিরমিযী হা/১১৫২; মিশকাত হা/৩১৭৩)।
উল্লেখ্য যে, শরী‘আতে শিশুকে দুগ্ধদানের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। বরং সাধারণ মেয়াদের কথা বলা হয়েছে। ইবনু তায়মিয়াহ (রহ.) বাক্বারাহ ২৩৩ আয়াতের তাফসীরে বলেন, এটি প্রমাণ করে যে, দুই বছর দুধ পান করানো ‘রাযা‘আত’ বা মায়ের দুগ্ধদানের পূর্ণ সময়। এরপর যা সে পান করাবে তা সাধারণ খাবার হিসাবে গণ্য হবে (মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ৩৪/৬৩ পৃ.)। ইবনু কাছীর (রহ.) বলেন, এটি মায়েদের জন্য সাধারণ নির্দেশনা যে, তারা সন্তানদের দু’বছর দুধ পান করাবে (ইবনু কাছীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)। কুরতুবী বলেন, সন্তানকে দুধ পান করানোর ক্ষেত্রে দু’বছরের কম-বেশী করা নির্ভর করবে সন্তানের উপকার-ক্ষতি ও পিতা-মাতার ইচ্ছার উপর (তাফসীর কুরতুবী)। সেজন্য ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, দুধ পান করানোর ক্ষেত্রে তিনটি সময় রয়েছে। সর্বনিম্ন দেড়বছর, মধ্যম দু’বছর ও সর্বোচ্চ আড়াই থেকে তিন বছর (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ২১/৬০; ড. ওয়াহবাতুয যুহায়লী, আল-ফিক্বহুল ইসলামী ১০/৩৬ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : মুহাম্মাদ রোকনুয্যামান, শিবগঞ্জ, বগুড়া।