উত্তর : ১৯৮৬ সালের ১১-১৬ অক্টোবর জর্ডানের রাজধানী আম্মানে অনুষ্ঠিত ওআইসি-র অঙ্গসংস্থা ‘আন্তর্জাতিক ইসলামী ফিক্বহ একাডেমী’র উক্ত মর্মে গৃহীত ৫নং সিদ্ধান্তটি অগ্রহণযোগ্য। কারণ সিদ্ধান্তটি স্পষ্টভাবে কুরআন ও সুন্নাহর বিপরীত। কেননা আল্লাহ বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে, সে যেন এর ছিয়াম রাখে’ (বাক্বারাহ ২/১৮৪)। আর রামাযান মাস বিশ্বের সর্বত্র একই দিনে শুরু হয় না। (২) আর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, সূর্যাস্তের সাথে সাথে ছায়েম ইফতার করবে’ (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/১৯৮৫)। আর এটা স্বতঃসিদ্ধ যে, সূর্যাস্তের সময় সর্বত্র এক নয়। এমনকি ঢাকার ৭/৮ মিনিট পরে রাজশাহীতে সূর্যাস্ত হয়। বাংলাদেশের সর্ব পূর্বে বান্দরবনের থানচির ১৭ মিনিট পর সর্ব পশ্চিমের চাঁপাই নবাবগঞ্জে সূর্যাস্ত হয়। মক্কা থেকে কলিকাতার সময়ের দূরত্ব ৩ ঘণ্টা ১২ মিঃ ৩৬ সেকেন্ড এবং ঢাকার দূরত্ব ৩ ঘণ্টা ২০ মিঃ ৪৮ সেকেন্ড। ফলে পশ্চিমে মক্কায় চাঁদ দেখার নির্ধারিত সময় পরে পূর্ব দিকে ঢাকায় চাঁদ দেখা সম্ভব। কিন্তু ঢাকায় তখন রাত থাকায় পরের দিন সন্ধ্যায় সেটা দেখা যায়। সেকারণ কখনো একদিন বা দু’দিন পরে বাংলাদেশে ছিয়াম বা ঈদ পালন করা হয়, স্রেফ চাঁদ দেখার আগপিছ হওয়ার কারণে।
রামাযান মাসের এক সফরে সূর্যাস্তের সাথে সাথে রাসূল (ছাঃ) ইফতারের জন্য উটে সওয়ার সাথী আব্দুল্লাহ বিন আবু আওফা-কে ছাতু ও পানি মিশাতে বলেন। ছাহাবী বললেন, এখনো দিন বাকী আছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে ধমক দিয়ে বললেন, তুমি নামো, আমাদের জন্য ছাতু ও পানি মিশাও! রাবী বলেন, যদি কেউ তখন উটের পিঠে উঠত, তাহ’লে সূর্য দেখতে পেত’ (বুখারী হা/১৯৫৫; মুসলিম হা/১১০১)। এতে বুঝা যায় যে, স্বাভাবিক চোখে সূর্যাস্ত দেখলেই ইফতার করতে হবে। আর এটি একই উদয়স্থলের মধ্যে বসবাসকারীদের জন্য প্রযোজ্য হবে। বিশ্বের সমগ্র এলাকার জন্য নয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা চাঁদ দেখে ছিয়াম রাখ ও চাঁদ দেখে ছিয়াম ছাড়’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৯৭০)। বড় কথা হ’ল ইসলামের ইতিহাসে কখনো পৃথিবীর সর্বত্র একই দিনে ছিয়াম ও ঈদ পালিত হয়েছে বলে জানা যায় না।
প্রশ্নকারী : আব্দুল্লাহ, যোহা হল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।