উত্তর : ‘তা‘লীক্ব’ বলতে ঐ সকল হাদীছকে বুঝানো হয়, যার সনদ থেকে হাদীছ সংকলক মুহাদ্দিছ এক বা একাধিক রাবীর নাম বিলুপ্ত করে দেন অথবা কখনও মূল উৎসসহ পূর্ণ সনদই বিলুপ্ত করে দেন। সাধারণতঃ সংক্ষেপায়নের উদ্দেশ্যেই তাঁরা এমনটি করে থাকেন। যেমন ছহীহ বুখারীতে মারফূ‘, মাওকূফ, মাকতূ‘ মিলিয়ে ১৩৪১টি হাদীছ এমনভাবে উদ্ধৃত হয়েছে। তবে এর মধ্যে ১৬০টি ব্যতীত অন্য সব হাদীছই ছহীহ বুখারীর অন্য স্থানে পূর্ণ সনদে উল্লেখিত হয়েছে। ফলে সেগুলি নিঃসন্দেহে ছহীহ। বাকী ১৬০টি হাদীছ পরবর্তীতে ভাষ্যকার ইবনু হাজার (রহঃ) পূর্ণ সনদে উল্লেখ করেছেন তাঁর লিখিত তাগলীকুত তা‘লীক্ব গ্রন্থে। এগুলোকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়। (১) যেগুলো ইমাম বুখারী দৃঢ়তাসূচক শব্দ (যেমন : قال فلان ‘অমুক বলেছেন’) বাক্য ব্যবহার করে উল্লেখ করেছেন সেগুলি ছহীহ। (২) যেগুলোর ক্ষেত্রে দৃঢ়তার ছীগাহ ব্যবহার করেননি (যেমন : يذكر، يروى ‘বর্ণিত হয়েছে’ শব্দ দ্বারা বর্ণনা করেছেন) সেগুলো তিনভাগে বিভক্ত। তার কিছু ছহীহ, কিছু হাসান, আবার কিছু যঈফও রয়েছে। যেগুলোর কিছু ইমাম বুখারী নিজেই উল্লেখ করেছেন, কিছু করেননি। উল্লেখ্য যে, এ সকল সনদবিহীন হাদীছের একটিও তিনি মূল ছহীহ সংকলনে উল্লেখ করেননি। কেবলমাত্র কোন অধ্যায় বা অনুচ্ছেদের শুরুতে বিষয়বস্ত্তর ব্যাখ্যার প্রয়োজনে উল্লেখ করেছেন (ইবনু হাজার, ফাৎহুল বারী ১/১৭-১৯; তাগলীকুত তা‘লীক্ব ‘আলা ছহীহিল বুখারী ১-৫ খন্ড; মুক্বাদ্দামা ইবনুছ ছালাহ ১/৩৬)।