উত্তর : প্রথমতঃ প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীছটি নিতান্তই যঈফ (ইবনু মাজাহ হা/৩৯৫০, সিলসিলা যঈফাহ হা/২৮৯৬; বিস্তারিত দ্রঃ আলবানী, মিশকাত হা/১৭৪-এর টীকা ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘কিতাব ও সন্নাহকে আঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ পৃঃ ৩০)। দ্বিতীয়তঃ হাদীছটি পবিত্র কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতের বিরোধী, যেখানে আল্লাহ তা‘আলা রাসূল (ছাঃ)-কে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘যদি তুমি জনপদের অধিকাংশ লোকের অনুসরণ কর, তবে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে দিবে। কারণ তারাতো শুধু কল্পনার অনুসরণ করে এবং অনুমানভিত্তিক কথা বলে’ (আন‘আম ৬/১১৬)। তৃতীয়তঃ চার মাযহাব একটি দল নয়; বরং চারটি দল। হিজরী ৪র্থ শতাব্দীর নিন্দিত যুগের পূর্বে যার কোন অস্তিত্ব ছিল না (শাহ অলিউল্লাহ, হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ ১/১৫২-৫৩ ‘৪র্থ শতাব্দী ও তার পরের লোকদের অবস্থা বর্ণনা’ অনুচ্ছেদ)। এর অনেক পূর্বেই ছাহাবায়ে কেরামের স্বর্ণযুগ অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। প্রকৃত অর্থে ছাহাবায়ে কেরামের জামা‘আত ছিল বড় জামা‘আত। এ সম্পর্কে হাদীছে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘আমার উম্মতের ৭২টি দল জাহান্নামে যাবে আর একটিমাত্র দল জান্নাতে যাবে। সেটিই হ’ল বড় জামা‘আত’ (আবুদাঊদ হা/৪৫৯৭, সনদ হাসান; মিশকাত হা/১৭২)। উক্ত বড় জামা‘আতের অর্থ আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন, ‘হক-এর অনুসারী দলই জামা‘আত। যদিও তুমি একাকী হও’ (ইবনু আসাকির, তারীখু দেমাশক্ব ১৩/৩২২ পৃঃ; সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/১৭৩-এর টীকা নং (৫)। অতএব হক-এর অনুসারী একজন ব্যক্তি হ’লেও তিনি বড় জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত। সংখ্যায় অধিক হ’লেই সেটি বড় জামা‘আত নয়। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের নিঃশর্ত অনুসারীগণই প্রকৃত অর্থে হকপন্থী। আর তারা হ’লেন ছাহাবায়ে কেরাম, সালাফে ছালেহীন ও তাদের যথাযথ অনুসারী সকল যুগের আহলেহাদীছগণ। সুতরাং যারা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ), খুলাফায়ে রাশেদীন ও ছাহাবায়ে কেরামের যথাযথ অনুসরণ করবেন, তারাই বড় জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত হবেন ইনশাআল্লাহ।